যাতে রাজাকারদের আস্তানায় পরিণত না হয় সেজন্য সতর্ক থাকুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
  • বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কেউ যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন
  • বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য
  • দেশকে সোনার বাংলাদেশে রূপান্তর করুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের আবার মাথা উঁচু করে দেশের সমৃদ্ধির পথচলাকে নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অগ্রগতি অবশ্যই চলতে হবে। কেউ যাতে দেশকে পিছিয়ে ঠেলে রাজাকারদের দেশে পরিণত করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকুন।”

শুক্রবার মিউনিখে হোটেল বার্গারহাউস গার্চিং-এ জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যের বিরুদ্ধে কেউ যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন যেখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।

তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনায় বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরের জন্য জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ফল সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তিনি বদ্ধপরিকর।

“আমি কখনই আমার চাহিদা বিবেচনা করি না, বরং ভাবি দেশ ও এর জনগণের উন্নতির জন্য আমি কী করতে পারি,” তিনি বলেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ গণস্বার্থী দল এবং দেশের মানুষ মাতৃভাষা বাংলাসহ দেশের স্বাধীনতা সবকিছু পেয়েছে।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের দল থাকায় আমরা কোভিড-১৯ মহামারীর মতো বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি,” তিনি বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবসময় জনগণের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, যখনই সুযোগ পাই মানুষের কল্যাণে কাজ করি।

ক্ষমতাসীন দলের প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও আস্থা আছে, কারণ তারা প্রয়োজনে দলকে সবসময় পাশে রাখে।

দেশের সার্বিক উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু মেগা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা নয়, তৃণমূলে উন্নয়ন করা।

বিএনপিকে লুটেরাদের দল আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জনগণের কল্যাণে কিছুই করে না বরং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলে।

পরাজয়ের ভয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পরিবর্তে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করায় তিনি বিএনপির ওপর কড়া সমালোচনা করেন।

তিনি দাবি করেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি কারণ তারা জানে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না।

তিনি বলেন, “একজন সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে যে দলটি গঠিত হয়েছিল তারা সবসময় এজেন্সিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের সাহায্য ছাড়া তারা কিছুই করতে পারে না,” তিনি বলেন।

তিনি হ্যাঁ/না ভোট এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস করার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে।

তবে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণের ভোটের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৭৫ সালের পর সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।

তিনি বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় না দিলে, ২০০৯ সাল থেকে দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গত ১৫ বছরে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেত। লুটেরা (বিএনপি) সব লুট করে নিবে।” .

শেখ হাসিনা যথাযথ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তার সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে উল্লেখ করে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে বলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ এবং মিউনিখের স্থানীয় মেয়র এবং জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।