চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মূল খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে

প্রকাশিত: ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩

~আওয়ামী লীগের নয় নেতা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন

~বেশ কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন

 

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে নয়টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের নয়জন বিশিষ্ট নেতা। এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ এই নির্বাচনী এলাকার মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার জন্ম দিয়েছে, যার ফলে রাজনৈতিক পটভূমিকে নতুন আকার দিয়েছে।

 

পটিয়ার বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন, হোসেন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, আব্দুল জব্বার চৌধুরী এবং আব্দুল মোতালেব সম্প্রতি সংসদ নির্বাচনের অধিবেশনে অংশ নিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে বদলি হয়েছেন।

 

তালিকায় আরও রয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ আসনে সাবেক মেয়র মঞ্জুর আলম, চট্টগ্রাম-১১ আসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।

 

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সরে দাঁড়ালে ছেলে মাহবুব উর রহমান রুহেলের পথ প্রশস্ত হয়েছে। তবে সম্প্রতি পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনী দৃশ্যপট তৈরি করে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 

এ আসনে আরও পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নামছেন। প্রার্থীরা হলেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) থেকে মোঃ ইউসুফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রতিনিধিত্বকারী শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির নুরুল করিম আবশার, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ থেকে আবদুল মান্নান এবং মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন চৌধুরী। জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিত্ব করছেন।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি)

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে প্রতীক পরিবর্তনের মুখে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আওয়ামী লীগের খাদিজাতুল আনোয়ার সনি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসেন মুহাম্মদ আবু তৈয়বের মধ্যে।

 

আসনটিতে আরও পাঁচজন প্রার্থীর অংশগ্রহণও দেখা যাচ্ছে: বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী, ইসলামিক ফ্রন্টের মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম, জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি মোঃ শফিউল আজম চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্টের মোঃ হামিদ উল্লাহ এবং স্বতন্ত্র। প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে সমর্থন জানিয়ে এম এ সালামের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের প্রত্যাহার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও আকার দেয়, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ নাজিম উদ্দিনের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়।

 

এ আসনে আরও পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন সুপ্রিম পার্টির কাজী মহসিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ মুক্তার আহমেদ, বিএনএফের আবু মোহাম্মদ শামসুদ্দিন এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ হাফিজ আহমদ।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও)

চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে প্রার্থী লাইনআপ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠের পক্ষে বর্তমান এমপি নোমান আল মাহমুদ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। শেঠ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সালামের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

আরও আট প্রার্থী যোগ হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তারা হলেন বিএনএফ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কিষাণ চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহিবুর রহমান বুলবুল, তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা, কল্যাণ পার্টির মোঃ ইলিয়াছ, ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. কামাল পাশা, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের আবদুল নবী।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী-হালিশহর)

চট্টগ্রাম-১০ আসনে সাবেক মেয়র মঞ্জুর আলমের স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু। এ ছাড়া নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলে প্রবেশ করছেন।

 

এ আসনে আরও ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন: তৃণমূল বিএনপির মোঃ ফেরদৌস বশির, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের আলমগীর হোসেন বৌদি, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের আবুল বাশার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম পার্টির মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম ও মো. জাসদের আনিসুর রহমান।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-সিটি)

চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন ও বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ লতিফের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

বিভিন্ন দলের অতিরিক্ত পাঁচজন প্রার্থী প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছেন। তারা হলেন ইসলামিক ফ্রন্টের আবুল বাসার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম পার্টির মোঃ মহিউদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত, এনপিপির নারায়ণ রক্ষিত ও গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক।

 

 

 

 

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া)

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্বকারী বর্তমান এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 

অতিরিক্ত পাঁচজন প্রার্থী এই আসনে বৈচিত্র্য আনেন। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির মোঃ ছালেম, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মোঃ আলী হোসেন, কল্যাণ পার্টির সোলায়মান কাশেমী, ইসলামী ঐক্যজোটের মোঃ হারুন ও মুক্তিজোটের মোঃ জসিম উদ্দিন।

 

 

 

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী)

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান।

 

এছাড়া এ আসনে ভোটের মাঠে রয়েছেন আরও আটজন প্রার্থী। তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ খালেকুজ্জামান, এনপিপির মোহাম্মদ মামুন আবছার চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ মহিউল আলম চৌধুরী, কংগ্রেসের এম জিল্লুর করিম শরীফ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আব্দুল মালেক, ন্যাপের আশীষ কুমার শীল ও ইসলামিক ফ্রন্টের মো. ঐক্যজোট মোঃ শওকত হোসেন চাটগামী।